ইতালির প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ
করোনাভাইরাস সঙ্কট সামাল দেওয়া নিয়ে সমালোচনার পর পদত্যাগ করতে চলেছেন ইতালির প্রধানন্ত্রী জুজেপে কন্তে।
করোনাভাইরাস সঙ্কটে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার তহবিল নিয়ে পার্টিতে বিভক্তির মধ্যে কয়েকসপ্তাহের রাজনৈতিক অন্তর্দ্বন্দ্বের পর পদত্যাগ করলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জুজেপে কন্তে।
বিবিসি জানায়, মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট সার্জিও মাত্তারেলার সঙ্গে দেখা করে তার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন কন্তে। এর আগে মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি তার পদত্যাগের ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট এখন পার্লামেন্টে দলের নেতাদের সঙ্গে দু’দিনের আলোচনার পর পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে সে ব্যাপারে তার সিদ্ধান্ত জানাবেন।
সরকার গঠনের আরেকটি সুযোগ পেতে অনেক ভেবে-চিন্তেই কন্তে পদত্যাগের এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পর কন্তেকে আরও শক্তিশালী একটি সরকার গড়ার সুযোগ দিতে পারেন প্রেসিডেন্ট।
কন্তে গত সপ্তাহে পার্লামেন্টে দুটো আস্থাভোটে বেঁচে গেলেও তার ক্ষমতাসীন কোয়ালিশন থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও রেনজির ছোট্ট ইতালিয়া ভিভা পার্টি বেরিয়ে যাওয়ায় তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারান।
কন্তে সরকারের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি সামাল দেওয়া এবং অর্থনৈতিক মন্দা নিয়ে বিরোধের কারণে কোয়ালিশনে এই ভাঙন ধরে।
রেনজির দলের শূন্যস্থান পূরণ করতে মধ্যপন্থি এবং স্বতন্ত্র সিনেটরদেরকে কোয়ালিশনে আনার চেষ্টায় তেমন সফলতা মেলেনি।
আর সে কারণেই পদত্যাগ করা ছাড়া কন্তের আর কোনও উপায়ও ছিল না। পদত্যাগের ফলে তিনি নতুন করে একটি চুক্তির চেষ্টা করার কিছু সময় পাবেন।
এ মুহূর্তে কন্তে রাজনৈতিক সঙ্কট নিয়ে সিনেটের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছেন। তবে তিনি নতনি সরকার গঠন করা কিংবা নতুন সরকারের নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবেন কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।
কন্তের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হবে নাকি তাকে নতুন একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গড়ার আহ্বান জানানো হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার এখন প্রেসিডেন্ট সার্জিও মাত্তারেলার। তিনি যদি মনে করেন কন্তে নতুন প্রশাসন গড়ার জন্য যথেষ্ট সমর্থন পাবেন তাহলে তিনি নতুন মন্ত্রিসভা গড়ার জন্য তাকে কিছুদিন সময় দিতে পারেন।
কিন্তু কন্তে সে চেষ্টায় ব্যর্থ হলে অন্য কাউকে এই কোয়ালিশন গড়ার দায়িত্ব অর্পন করতে হবে প্রেসিডেন্ট মাত্তারেলাকে। এরপর সে চেষ্টাও যদি ব্যর্থ হয় তাহলে নতুন করে আগাম নির্বাচন ডাকতে হবে।
২০১৮ সালে ইতালির প্রধানমন্ত্রী হন কন্তে। পরপর দুটি অত্যন্ত ভিন্ন সরকারের নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। ১৫ মাস তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন অ্যান্টি-এসটাবলিশমেন্ট ফাইভ স্টার মুভমেন্ট (এম৫এস) এবং কট্টর-ডান লিগ কোয়ালিশনের।
তবে আগাম নির্বাচনের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে লিগ নেতা মাত্তেও সালভিনি কোয়ালিশন ছেড়ে বেরিয়ে গেলে ২০১৯ সালে ফাইভ স্টার মুভমেন্ট (এম৫এস) এবং মধ্য-বাম ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডি) নিয়ে কোয়ালিশন সরকারের নেতৃত্ব দেন কন্তে।