সাইপ্রাসের পাফোস শহরে অনুষ্ঠিত ২৩ তম লগিকন আন্তর্জাতিক ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করেছেন জার্মানি প্রবাসী বাংলাদেশি শিব শংকর পাল। ৫ ডিসেম্বর (রোববার) প্রায় দশ হাজার প্রতিযোগীর সঙ্গে বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা নিয়ে দৌড়েছেন জার্মানির মিউনিখ প্রবাসী এই দৌড়বিদ। এটি তার ব্যক্তিগত ক্যারিয়ারের ১১৪ নম্বর আন্তর্জাতিক ম্যারাথনে অংশ নেয়া।  

ঐতিহাসিক এই ম্যারাথন দেখতে শহরের বিভিন্ন স্থানে জড়ো হয়েছিলেন হাজার হাজার দর্শণার্থী। পাফোস শহরের পেত্রা তো রমিও থেকে শুরু হয়ে ৪২.২ কিলোমিটার দূরত্বের এই ম্যারাথন শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক স্থান ঘুরে পাফোস কেসটেল এসে শেষ হয়। বাংলাদেশের নবাবগঞ্জে জন্মগ্রহণ করা শিব শংকর পালের ৪২ দশমিক ২ কিলোমিটার দীর্ঘপথ দৌড়িয়ে শেষ করতে সময় লেগেছে ৩ ঘণ্টা ৪৩ মিনিট।

জার্মানি প্রবাসী শিব শংকর পাল পৃথিবীর বিখ্যাত প্রায় সব ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করেছেন। বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারি শুরুর ঠিক আগে ২০২০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি শিব শংকর পাল ইসরায়েলের তেলআবিবে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি এ বছর মিউনিখ এবং অষ্ট্রিয়ার লিঞ্জ ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করেছেন। এছাড়াও নেপালের হিমালয় পাহাড়ে অনুষ্ঠিত পৃথিবীর কঠিনতম ম্যারাথন খ্যাত এভারেস্ট ম্যারাথনেও বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে দৌড়িয়েছিলেন শিব শংকর পাল। এর আগে আন্তর্জাতিক এই দৌড়বিদ ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে নিউইয়র্কে ব্যক্তিগত ক্যারিয়ারের ১০০তম ম্যারাথনে অংশ নিয়েছিলেন।

৫৬ বছর বয়সী শিব শংকর পাল জার্মানির মিউনিখ শহরের একজন সফল ব্যবসায়ী হলেও তার অদম্য শখ বিশ্বের বড় বড় ম্যারাথনে বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা নিয়ে দৌড়ানো। তিনিই একমাত্র বাংলাদেশি, যিনি আন্তর্জাতিক ম্যারাথনে শতাধিকবার অংশগ্রহণের বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ১১২টি ম্যারাথনে বাংলাদেশের পতাকা ওড়াতে পেরে উচ্ছ্বসিত শিব শংকর পাল। সাইপ্রাস থেকে তিনি জানিয়েছেন, ডিসেম্বর মাস আমাদের মহান বিজয়ের মাস। এই মাসে সাইপ্রাসের পাফোস শহরে অনুষ্ঠিত লগিকন আন্তর্জাতিক ম্যারাথনে বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা উড়াতে পেরে তিনি গর্বিত। 

উল্লেখ্য, শিব শংকর পাল ১৯৮৯ সালে জার্মানি পাড়ি জমান। ১৯৯৯ সালে জার্মানির মিউনিখে পাল ইলেক্ট্রনিকস নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। তিনি মিউনিখ শহর কর্তৃপক্ষ থেকে একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে পুরস্কারপ্রাপ্ত। ২০১৯ সালে জার্মানির বিখ্যাত টিভি চ্যানেল ‘জেডডিএফ’ শিব শংকর পালের সফলতা নিয়ে বিশেষ ডকুমেন্টারি প্রচার করেছিল।