মহানবী (সা.)-এর পাঁচটি বিশেষ উপদেশ
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন- রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, এমন কে আছে, যে আমার কাছ থেকে এ কথাগুলো গ্রহণ করবে এবং সে মোতাবেক নিজেও আমল করবে অথবা এমন কাউকে শিক্ষা দেবে যে অনুরূপ আমল করবে? আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি আছি। অতঃপর তিনি আমার হাত ধরলেন এবং গুনে গুনে পাঁচটি কথা বলেন। যথা-
১. তুমি নিষিদ্ধ ও হারাম জিনিস থেকে বিরত থাকো, তাহলে তুমি লোকদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বড় আবিদ তথা ইবাদতকারী বলে গণ্য হবে। অন্য হাদিসে নবী করিম (সা.) গুনাহ বর্জনকারীকে বাস্তবিক মুহাজির বলে ঘোষণা করেছেন। (বুখারি, হাদিস : ১০)।
২. তোমার ভাগ্যে আল্লাহ তাআলা যা নির্ধারিত করে রেখেছেন, তাতে খুশি থাকো, তবে তুমি মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বড় ধনী হবে। অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে নবী করিম (সা.) বলেছেন, ধনের আধিক্য হলে ধনী হওয়া যায় না, বরং অন্তরের ধনীই প্রকৃত ধনী। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৪৪৬)।
৩. প্রতিবেশীর সঙ্গে নম্র আচরণ করো, তাহলে তুমি একজন প্রকৃত মুমিন হতে পারবে। অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে নবী করিম (সা.) বলেন, প্রকৃত মুসলমান সেই ব্যক্তি, যার জিহ্বা ও হাত থেকে অন্য মুসলমান আপদমুক্ত থাকে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১০)।
৪. যা নিজের জন্য পছন্দ করো, তা-ই অন্যের জন্যও পছন্দ করো, তাহলে প্রকৃত মুসলমান হতে পারবে। অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে নবী করিম (সা.) বলেন, তোমাদের কেউ প্রকৃত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে তার প্রতিবেশী ভাইয়ের জন্য সেটাই পছন্দ করবে, যা তার নিজের জন্য পছন্দ করে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৩)।
৫. বেশি হাসা থেকে বিরত থাকো। কেননা অতিরিক্ত হাস্য-কৌতুক হৃদয়কে মেরে দেয়। এ কারণেই সুরা তাওবার ৮২ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে- অর্থাৎ ‘তোমরা হাসো কম কাঁদো বেশি।’
আর হাদিসে নবী করিম (সা.) বলেন, হে উম্মতে মুহাম্মদী! ওই সত্তার শপথ! যার হাতে মুহাম্মদের প্রাণ। আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে, তাহলে হাসতে কম কাঁদতে বেশি। বিছানায় স্ত্রীদের উপভোগ করতে না, বাড়িঘর ছেড়ে পথে-প্রান্তরে বেরিয়ে পড়তে, আল্লাহ তাআলার সামনে কাকুতিমিনতি করতে। (বুখারি, হাদিস : ১০৪৪)।
অন্য হাদিসে নবী করিম (সা.) বলেন, তোমরা খুব ক্রন্দন করো, যদি কাঁদতে না পারো, তবে কান্নার ভান করো। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৩৩৭/৪১৯৬)।
আল্লাহ তাআলা আমাদের উক্ত গুণ অর্জন করার এবং তার ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করেন। আমিন। (রেফারেন্স : সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৩০৫; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৮০৯৫; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪২১৭)