সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতিতে স্বস্তি ফিরলেও বেড়েছে ভোগান্তি
![](https://europentv.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2024/07/05/img20240703111939_01.jpg?itok=T8LupXTA×tamp=1720173288)
তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি : বৃষ্টি কম হওয়ায় আর ভারত থেকে ঢলের পানি না আসায় সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। সুরমা,যাদুকাটাসহ জেলার নদ নদীর পানি বিপদ সীমানা নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কয়েকটি উপজেলার সাথে সড়ক যোগাযোগ সচল হওয়ায় ভাটি এলাকার মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরলেও নিন্মাঞ্চলের পানি বন্দি মানুষজনের মধ্যে উৎবেগ আর উৎকন্ঠা এখনও বিরাজ করছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার(৪ জুলাই) সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৭ সেঃনিঃ নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নিন্মাঞ্চলের বসত বাড়ি থেকে পানি নেমেছে। মেঘালয়ের ভারী বর্ষণের সঙ্গে সুনামগঞ্জে বৃষ্টিপাত হওয়ায় নদ নদীর পানি বাড়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,ঢলের পানিতে জেলার নিন্মাঞ্চলে বেশ কিছু গ্রামীণ সড়ক,বসতবাড়ি ,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,হাসপাতাল,কমিউনিটি ক্লিনিক ডুবে এখনও পানিতে ডুবে আছে। সড়ক থেকে পানি নেমে যাওয়ায় জেলা সদরের সাথে সড়ক পথে যোগাযোগ সচল হয়েছে তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর,জামালগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দাগনের। এছাড়াও দোয়ারা বাজার উপজেলা সাথে সুরমা,লক্ষীপুর সহ তিনটি ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ সচল হওয়ার স্বস্তি ফিরেছে তবে ভোগান্তি কমেনি।
এছাড়াও বিভিন্ন উপজেলার নিন্মাঞ্চলের গ্রামীণ সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে আছে মানুষ। আর যে সকল সড়ক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে নতুন করে আবারও ভাঙা চুরা সড়কের উপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে শিশু,নারী ও পুরুষদেরকে।
ব্যবসায়ী সাদেক আলী জানান,গত ১৩দিন পূর্বের বন্যার ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফেরার আগেই আবার হুহু করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার পর থেকে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কায় ছিলাম। গত দুই দিন ধরে পানি কমেছে আর বৃষ্টিও নেই। প্রতি বছর এই পাহাড়ী ঢলের পানিতে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছি। এর থেকে মুক্তির পথ খোঁজতে হবে দায়িত্বশীল কতৃপক্ষের। আমরা ত্রান চাই না বন্যা মোকাবিলা স্থায়ী সমাধান করার দাবি জানাই।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা দূর্ঘাপুর গ্রামের জাকিয়া বেগম জানান,আগের বন্যাতেই কাচা ঘরবাড়ি ও জিনিষপত্র নষ্ট হয়েছে। এরপর আবারও পানি ঘরে না ডুকলে এখন চারপাশে পানি। পরিবার নিয়া এই পানির মাঝে বড় বিপদেই আছি। কবে যে আমাদের দূর্ভোগ শেষ হবে আল্লাহ ভাল জানেন।
আমরিয়া গ্রামের বাসিন্দা শামিম মিয়া জানান,নদীর পাড়েই আমার বাড়ি। গত ১২ দিনের ব্যবধানে দুই বার বন্যায় ঘরে পানি উঠায় অনেক ক্ষতি হয়েছিল দুই বারেই আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে ছিলাম। এখন পানি কমায় বাড়িতে আছি। এই অবস্থায় কি করে পরিবার নিয়ে চলি কোন পথ খোঁজ পাচ্ছি না।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের(ইউপি)সাবেক চেয়ারম্যান এরশাদ মিয়া জানান,উজানের নেমে আসা পানি বাড়ি ঘরে প্রবেশ করায় চরম দুর্ভোগে আছে নিন্মাঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্থরা। পানি কিছু টা কমেছে,তবে বৃষ্টি বাড়লে আর পাহাড়ি ঢলের পানি আসলে পরিস্থিতি অবনতির আশংকা আছে মানুষ।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম জানান,উপজেলার সীমান্ত নদী দিয়ে প্রচুর পরিমাণে পাহাড়ি ঢলের পানি ভাটির দিকে নামায় সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভপুর তাহিরপুর সড়ক পানি ডুবে গিয়েছিল,গত দু দিন ধরে পানি কমায় এই সড়ক পথ সচল হয়েছে।তবে ভাঙাচুরা সড়কে দূর্ভোগ বেড়েছে। বন্যা কবলিতদের মধ্যে ত্রান বিতরণ করা হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী জানান,পানি কিছু কমেছে। বন্যা কবলিত মানুষের মধ্যে ত্রান বিতরণ করা হচ্ছে।