নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ২১ জন চিকিৎসকের বিপরীতে ৭ জন চিকিৎসা সেবা ব্যাহত
আকতার হোসেন ভুইয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক ও জনবল সংকটের কারণে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। ৫০ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২১ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে ১৪ জন চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে।মাত্র ৭ জন চিকিৎসক কর্মরত রয়েছে। এর মধ্যে ২ জন চিকিৎসক সংযুক্তির আদেশের ভিত্তিতে অন্যত্র কর্মরত রয়েছে। চিকিৎসক সংকটের পাশাপাশি রয়েছে নার্সসহ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সংকট।
উপজেলা কমপ্লেক্সটি ২০০৭ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও বাস্তবে সেবাদানের ক্ষেত্রে কোন প্রকার উন্নতি ঘটেনি। অদ্যাবধি চিকিৎসক ও জনবল বাড়েনি।এ উপজেলায় চিকিৎসক ও সেবিকাদের পোষ্টিং দেয়া হলেও মন্ত্রণালয়সহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে সহজেই অন্যত্র বদলি হয়ে চলে যান।ফলে শুণ্যপদ আর সহজে পূরণ হয় না।চিকিৎসা সেবা আর বঞ্চনার অবসান হয় না জনসাধারণের।উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে সাড়ে চার লাখ জনসংখ্যার বসবাস। উপজেলার দুর-দুরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
ভূক্তভোগীরা জানায়,হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসকের পরির্বতে চিকিৎসা দিচ্ছে পিয়ন আর ওয়ার্ড বয়রা।প্রয়োজনীয় চিকিৎসক না থাকায় ব্যান্ডেজ,সেলাইসহ বিভিন্ন অস্ত্রোপাচার পিয়ন,ওয়ার্ড বয়রা করে থাকেন। ফলে সব সময় রোগীরা মৃত্যুর ঝুঁিকর আশংকায় থাকেন।
উপজেলা কমপ্লেক্সে জুনিয়র কনসালটেন্ট(স্যার্জিকেল),জুনিয়র কনসালটেন্ট(চর্ম ও যৌন),জুনিয়র কনসালটেন্ট(গাইনিওঅবস),জুনিয়য়কনসালটেন্ট(এ্যানেস্থেসিওলজি),জুনিয়র কনসালটেন্ট (ডেন্টাল),জুনিয়র কনসালটেন্ট (নাক কান গলা),জুনিয়র কনসালটেন্ট(অর্থোপেডিক্স),জুনিয়র কনসালটেন্ট(মেডিসিন),জুনিয়র কনসালটেন্ট(চক্ষু),মেডিকেল অফিসার(এ্যানেস্থেসিয়া), প্যাথলজিষ্ট,হোমিওপ্যাথিকসহ অনেক চিকিৎসকের পদ র্দীঘদিন ধরে শূণ্য পড়ে রয়েছে। ৫০ শয্যা হাসপাতাল হিসেবে খাদ্য বরাদ্ধ পাওয়া গেলেও চাহিদা মোতাবেক ঔষধপত্রসহ চিকিৎসক,নার্স ও জনবল সংকট বিরাজ করছে।অথচ এ হাসপাতালে প্রায় সময় ইনডোরে ৮০/৯০ জন রোগী ভর্তি থাকে এবং আউটডোরে ৫/৬‘শ রোগী চিকিৎসা নিতে আসে।৫০ শয্যা হলেও শয্যার তুলনায় রোগী বেশী ভর্তি হওয়ায় প্রায়ই রোগীদেরকে মেঝেতে বা বারান্দায় থাকতে হয়।
উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ১টি পল্লী স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ৩টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের অধীনে ৮টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র রয়েছে।এসব কেন্দ্রে নানাবিধ সংকট বিরাজ করছে। উপজেলার একমাত্র গুনিয়াউক ১০ বেড পল্লী স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অবস্থা জরাজীর্ণ। ২ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও একজনও নেই। ডাক্তার,নার্স,কর্মচারিসহ ওষুধ,অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ,জরার্জীণ অবকাঠামো,চিকিৎসক ও কর্মচারিদের আবাসিক সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ অভিজিৎ রায় ডাক্তার সংকটের কথা স্বীকার করে জানায়, প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক না থাকায় চিকিৎসা কার্যক্রম চালাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। ডাক্তার সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যার বিষয়ে সিভিল সার্জনসহ উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে অবহিত করা হচ্ছে।