চীনের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবী করে জার্মান পত্রিকায় প্রতিবেদন
করোনা ভাইরাসের কারণে চীনের কাছে ১৩০০০ কোটি পাউন্ডের ক্ষতিপূরণ চেয়েছে জার্মানি এমন একটি মন্তব্য প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দেশটির জনপ্রিয় জাতীয় পত্রিকা ‘বিল্ড। করোনা মহামারির জন্য বেইজিংকে দায়ী করে সর্ববৃহৎ জাতীয় পত্রিকা ‘বিল্ড’এ প্রকাশিত একটি মন্তব্য প্রতিবেদনে এমন দাবি জানানো হয়েছে। একই কারণে এরই মধ্যে চীনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ফ্রান্স, বৃটেন ও যুক্তরাষ্ট্র। এবার তার সঙ্গে যোগ দিলো জার্মানি। মন্তব্য প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, চীনের উহান থেকেই করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি এবং বিষয়টিকে চীন ধামাচাপা দিয়ে রাখতে চেয়েছিল। এ ছাড়া তারা করোনায় মৃতের সংখ্যাকে অনেক কম করে দেখিয়েছে। যেহেতু ভাইরাসটির উৎসস্থল চিন, তাই বেজিংয়ের উপর বেজায় নারাজ আমেরিকা ও ইউরোপ।
ইতিমধ্যেই বেজিংকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে আমেরিকা। এবার, আরও একধাপ এগিয়ে চিনের কাছে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে জার্মানির প্রথম সারির এই সংবাদমাধ্যম। তবে জার্মান ফেডারেল সরকারের পক্ষ থেকে এই বিলের ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। সরকারের কোন কর্মকর্তার পক্ষ থেকেও এই বিষয়ে কোন পতিক্রিয়া বা কোন বক্তব্য জানায়নি। চিনকে তুলোধোনা করে সদ্য প্রকাশিত এই প্রবন্ধে পর্যটন, উৎপাদন শিল্প-সহ বিভিন্ন খাতে করোনার জেরে হওয়া লোকসানের খতিয়ান তুলে ধরে চিনের বিরুদ্ধে ১৩০ বিলিয়ন পাউন্ডের ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে। কড়া ভাষায় বেজিংয়ের সমালোচনা করে ওই প্রবন্ধে বলা হয়েছে, গোটা বিশ্বের কাছে ইচ্ছাকৃতভাবে করোনা সংক্রান্ত তথ্য গোপন করেছে শি জিনপিং প্রশাসন। সঠিক সময়ে বেজিং সমস্ত তথ্য প্রকাশ করলে এই মহামারিকে ঠেকানো যেত।
এদিকে, সমস্ত অভিযোগ খারিজ করে পালটা সংবাদপত্রটির বিরুদ্ধে উগ্র জাতীয়তাবাদ উসকে দেওয়ার অভিযোগ জানিয়েছে বেজিং। ইতিপূর্বে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, চিন ইচ্ছাকৃতভাবে করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে, এই প্রমাণ পেলেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শি জিনপিংকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে ট্রাম্প সাফ বলেন, “চিনের ভুলের জন্য এখন গোটা পৃথিবীকে ভুগতে হচ্ছে।
ওরা চাইলেই ভাইরাসটিকে ছড়ানো থেকে আটকাতে পারত। কিন্তু সেটা করা হয়নি।” ‘বিল্ড’এ প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে পর্যটনখাতে ২৭০০ কোটি ইউরো বা ২৩৫২.০২ কোটি পাউন্ড ক্ষতি দেখানো হয়েছে। চলচ্চিত্র শিল্পে ৭২০ কোটি ইউরো বা ৬২৭.২১ কোটি পাউন্ড, জার্মানির বিমান সংস্থা লুফথানছায় ঘন্টা প্রতি ১০ লাখ ইউরো বা ৮৭ লাখ পাউন্ড এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায় ৫০০০ কোটি ইউরো বা ৪৩৫৫.৬০ কোটি পাউন্ড ক্ষতি দেখানো হয়েছে।
‘বিল্ড’-এর হিসাব মতে, এই ক্ষতি জার্মানিতে যদি জাতীয় প্রবৃদ্ধি শতকরা ৪.২ ভাগ পতন হয়, তাহলে মাথাপ্রতি ক্ষতি হবে ১৭৮৪ ইউরো বা ১৫৫০ পাউন্ড। এ নিয়ে ‘বিল্ড’-এর সংবাদ শিরোনাম ‘ Was China uns jetzt schon schuldet’। অর্থাৎ আমাদের কাছে চীনের যে ঋণ।