চীনের পণ্যে ২৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের

চীন থেকে আমদানি করা পণ্যে ২৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আমদানি করা গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরতা এবং এর সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়ে তদন্ত চালাতে একটি নির্বাহী আদেশে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বাক্ষরের পরপর হোয়াইট হাউস এই ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে এ তথ্য দিয়েছে হোয়াইট হাউস। খবর বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের।
নির্বাহী আদেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রীকে ১৯৬২ সালের বাণিজ্য সম্প্রসারণ আইনের আওতায় ২৩২ ধারা প্রয়োগ করে তদন্ত শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়ে জটিল খনিজ উপাদানগুলো আমদানি করতে গেলে কী প্রভাব পড়তে পারে তা মূল্যায়নের জন্যই চালানো হবে এই তদন্ত তৎপরতা। এর আগে ট্রাম্প প্রশাসন কপার, লাম্বার, স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ক্ষেত্রে যাচাইবাছাই করার জন্য এই আইন প্রয়োগ করেছিল।
যদিও এই তদন্তের বিষয়ে বিশেষভাবে চীনের নাম উল্লেখ করা হয়নি, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল সার্ভের তথ্য অনুযায়ী চীনই হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ ৫০টি খনিজ পদার্থের মধ্যে ৩০টির সবচেয়ে বড় উৎপাদনকারী দেশ।
গত ৪ এপ্রিল চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চীনের পণ্যে উচ্চ হারে মার্কিন শুল্ক আরোপের পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে সাত ধরনের বিরল মাটির ধাতুর ওপর রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এই মৌলিক পদার্থগুলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা, জ্বালানি ও গাড়ি নির্মাণসহ তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে ব্যবহারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
চীনের সিরিঞ্জ এবং সুই আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে ২৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। ১২ এপ্রিল ট্রাম্প প্রশাসনের নির্দেশ অনুসারে তা আরোপিত হয়। ২০২৫ সালের আগের (১০০ শতাংশ লেভি) শুল্ক আরোপ এবং পাল্টাপাল্টি (১২৫ শতাংশ) শুল্ক আরোপের বাইরে তা আরোপিত হয়। এছাড়া লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারিতে আরোপ করা হয় ১৭৫ শতাংশ শুল্ক, স্কুইড আমদানিতে ১৭০ শতাংশ এবং উলের তৈরি সুয়েটারে ১৬৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবারের প্রেস ব্রিফিংয়ে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট চীন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধ এড়াতে সংলাপ শুরু করার বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, বল এখন চীনের কোর্টে।
ক্যারোলিন লেভিট আরও বলেন, আমাদের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছানো চীনের জন্য বেশি প্রয়োজন, চীনের সঙ্গে আমাদের কোনো চুক্তি করার প্রয়োজন নেই।
অন্যদিকে, এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান আজ বুধবার বলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র সত্যি সত্যি সংলাপ চায় তবে দেশটিকে সবার আগে সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করা বন্ধ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, গঠনমূলক আলোচনার জন্য প্রয়োজন পারস্পরিক সম্মান ও সমতা।