বিনিয়োগ সম্মেলনে ৪৫০ বিদেশি বিনিয়োগকারী এসেছেন

এবারের বিনিয়োগ সম্মেলনে প্রায় ৪৫০ জন বিদেশি বিনিয়োগকারী অংশগ্রহণ করেছেন। অবশ্য কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে দুজনও এসেছেন। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এ তথ্য জানিয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিটের সমাপনী প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি। এতে উপস্থিত ছিলেন বিডার নির্বাহী সদস্য শাহ মোহাম্মদ মাহবুব ও প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
এবারের বিনিয়োগ সম্মেলনে যোগ দিতে ৫৫০ জন বিদেশি বিনিয়োগকারী রেজিস্ট্রেশন করেছিল জানিয়ে নাহিয়ান রহমান রোচি বলেন, আজকে পর্যন্ত ৪০০ থেকে ৪৫০ বিদেশি বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ সম্মেলনে এসেছেন। অবশ্য কোন কোন প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে দুজনও এসেছেন। তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা ও কী পরিমাণ বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে তা এই মুহূর্তে আমরা বলতে পারছি না। এই তথ্য পেতে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। আমরা তা পাওয়া মাত্র আপনাদের জানিয়ে দিব।
বিনিয়োগ সম্মেলন বিনিয়োগ বাড়ানো মূল উদ্দেশ্য না জানিয়ে নাহিয়ান রহমান রোচি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আমাদের দেশে আসছেন। দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো ঘুরে দেখেছেন। আমাদের বিনিয়োগ সম্ভাবনাগুলো দেখছেন। বিনিয়োগ সম্মেলন শেষে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ইতিবাচক বিনিয়োগ করার স্মৃতি নিয়ে ফিরে যাবেন। তিনি বলেন, সামিট উপলক্ষ্যে চীনা আরএমজি প্রতিষ্ঠান হান্ডার সাথে ১৫০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি হয়েছে, এছাড়া শপআপ ১১০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ পেয়েছে।
আগের চেয়ে বিনিয়োগ প্রক্রিয়া কিছুটা সহজ মন্তব্য করে নাহিয়ান রহমান রোচি বলেন, এবার অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী আমাদের কাছে এসে জানিয়েছে, আগের বিনিয়োগ প্রক্রিয়া কঠিন ছিল। কিন্তু এবারে দেখছি, সেই জটিল প্রক্রিয়াগুলো সহজ করা হয়েছে। তারা বলছে, আরও কিছু সমস্যা রয়েছে। আমরা তাদের সেই সমস্যার কথা শুনছি। এনিয়ে কাজ করছি। কিভাবে বিনিয়োগ প্রক্রিয়া আরও সহজ করা যায়। তবে এবারের বিনিয়োগ সম্মেলনের মাধ্যমে ইতোমধ্যে বিদেশি বিনিয়োগের পাইপলাইন তৈরি হয়েছে। ধীরে ধীরে পাইপলাইন আরও প্রসস্থ হবে।
নাহিয়ান রহমান রোচি আরও বলেন, এরইমধ্যে যেসব প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগের প্রস্তাব বা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তাদের সাথে ধারাবাহিক যোগাযোগ করা হবে। নিয়মিত যোগাযোগ অনেকদিন পষর্ন্ত চলবে। বিনিয়োগ পেতে দফায় দফায় আলোচনা হবে। রাখা হবে মনিটরিংয়ে। বিনিয়োগ করতে সাধারণত বিনিয়োগকারীরা ১৮ থেকে ২৪ মাস সময় নেয়। তাই সম্মেলন শেষে অংশগ্রহণকারীদের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ধরে যোযোগাযোগ করবো।
ইতোমধ্যে বিনিয়োগকারীরা কিছু চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেছেন জানিয়ে নাহিয়ান রহমান রোচি বলেন, এর মধ্যে রয়েছে নীতির ধারাবাহিকতা, একসেস টু রিসোর্স ও দুর্নীতির চ্যালেঞ্জ। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আমাদের রয়েছে এবং তা দূর করার চেষ্টা চলছে।
নাহিয়ান রহমান রোচি বলেন, বিনিয়োগাকারীদের এখানে বিনিয়োগ করতে এসে বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরতে হচ্ছে। এনবিআরসহ বিভিন্ন সরকারি অফিসে কাগজপত্র ছাড় করতে ব্যবসায়ীদের অনেক সময়ক্ষেপণ করতে হচ্ছে। অনেকেই বিভিন্ন জটিলতায় পড়ছেন। সম্মেলনে সবার সেইসব অভিজ্ঞার কথা শুনছি। এসব জটিলতা থেকে উত্তরণকে এবার বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে তাদেরকে বিনিয়োগ করার আহবান জানাচ্ছি। এবারের সম্মেলনে পলিসিসহ জটিলতাগুলো নিরসনে বিনিয়োগকারীদের যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, সেগুলো নিয়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে।
নাহিয়ান রহমান রোচি বলেন, শুধু এনবিআর নয়, সরকারি সেবায় ধীরগতি আছে। এরই মধ্যে আমরা আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়ের জন্য পদক্ষেপ নিয়েছি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) গ্রীণ চ্যানেল তৈরি করা হচ্ছে।