দিরাইয়ে প্রতিবন্ধী শিশুর পাশে প্রশাসন

শারীরিক প্রতিবন্ধী তামজিদ হোসেনকে আড়াই বছরের রেখে মারা যান মা শিরুন বেগম। তামজিদের পিতা আব্দুল তায়িদ একজন দিনমজুর। স্ত্রীর মৃত্যুর পর দেখার কেউ না থাকায় আব্দুল তায়িদ শিশুটির দেখভাল করতে শুরু করেন। নিজের বাড়িঘর না থাকায় অন্যের বাড়িতে আশ্রিত ছিলেন। পরে সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘরে ঠাঁই হয়।
আব্দুল তায়িদ সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের তেতৈয়া গ্রামের বাসিন্দা। শারিরীক প্রতিবন্ধী শিশুকে একা রেখে দিনমজুরের কাজ করতে যেতে পারতেন না। এতে উপার্জন বন্ধ হয়ে যায়। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটতো তার। আব্দুল তায়িদের এমন মানবেতর জীবনযাপনের বিষয়টি জানতে পেরে সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন দিরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার সনজীব সরকার। শিশুটিকে লালনপালনের পাশাপাশি আব্দুল তায়িদ যেন রোজগার করে চলতে পারেন সেই উদ্যোগ নেন তিনি। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের অর্থায়নে পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় ৪৫ হাজার টাকার মুদিমাল ও চা বিক্রির সরঞ্জাম প্রদান করা হয় আব্দুল তায়িদকে। দোকানের সাজসজ্জার জন্য সরকারি তহবিল থেকে আরও নগদ ৫ হাজার টাকা দেয়ার পাশাপাশি ইউএনও সনজীব সরকার ব্যক্তিগতভাবে কিছু টাকা দেন। এছাড়া শারীরিক প্রতিবন্ধী তামজিদ হোসেনকে উপজেলা পরিষদ থেকে একটি হুইল চেয়ার দেয়া হয়। বুধবার (১৮ জুন) বিকেলে দিরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার সনজীব সরকার আব্দুল তায়িদের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে উপস্থিত হয়ে এসব মালামাল ও হুইল চেয়ার হস্তান্তর করেন। এ সময় উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের ফিল্ড সুপারভাইজার রাজীব চন্দ্র সরকার, ইউপি সদস্য আব্দুল আলীসহ এলাকার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
আব্দুল তায়িদ বলেন, আমার শিশুটি শারীরিকভাবে অক্ষম। সে বসতে কিংবা দাঁড়াতে পারে না। দিনরাত বিছানায় শুয়ে থাকে। তার পেশাব-পায়খানা আমাকেই পরিস্কার করতে হয়। এজন্য কোন কাজকর্ম করতে পারিনা। ইউএনও স্যার দোকান করে দেওয়ায় এখন আমি ঘরে বসে উপার্জন করতে পারবো। তিনি বলেন, হুইল চেয়ার পেয়ে আমার প্রতিবন্ধী শিশুটি অনেক খুশি।
দিরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার সনজীব সরকার বলেন, আব্দুল তায়িদ অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েছিলেন। শিশুটিকে রেখে কাজে যেতে পারতেন না। তিনি যাতে ঘরে বসে উপার্জন করতে পারেন, আমরা সে ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ইউএনও বলেন, এরআগে শিশুটিকে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন সহায়তা দেয়া হয়েছে।##