ডাক্তারের অভাবে নাসিরনগরে স্বাস্থ্য সেবায় বেহাল দশা বিরাজ করছে

আকতার হোসেন ভুইয়া,নাসিরনগর(ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥প্রয়োজনীয় ডাক্তারের অভাবে খুড়িঁয়ে খুড়িঁয়ে চলছে নাসিরনগর উপজেলার স্বাস্থ্য সেবা। ৫০ শয্যা হাসপাতালে ২১ জন ডাক্তার থাকার কথা
থাকলেও বর্তমানে ১২ জন ডাক্তারের পদ শূন্য রয়েছে । মাত্র ৯ জন ডাক্তার কর্মরত রয়েছে। এর মধ্যে ২ জন চিকিৎসক সংযুক্তির আদেশের ভিত্তিতে অন্যত্র কর্মরত রয়েছে। সাড়ে চার লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স্রসহ
ইউনিয়ন পর্যায়ে ১টি পল্লী স্বাস্থ্য কেন্দ্র,৩টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও ৮টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র রয়েছে।এসব কেন্দ্রে চি কিৎসক,কর্মচারি,ওষুধ ও যন্ত্রপাতির স্বল্পতা,বিদুৎ,পানি,স্যানিটেশন
সমস্যা,অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ,জরার্জীণ অবকাঠামো,চিকিৎসক ও কর্মচারিদের আবাসিক সংকটসহ নানাবিধ সংকটে বেহাল দশা বিরাজ করছে। ২০০৭ সালে উপজেলার একমাত্র হাসপাতালটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও বাস্তবে
সেবাদানের ক্ষেত্রে কোন প্রকার উন্নতি ঘটেনি।এখানে এসে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার না পেয়ে দুর-দুরান্ত থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে এসে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে অসহনীয় দূভোর্গের শিকার হচ্ছে। একাধিক সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ডাক্তারের পরির্বতে চিকিৎসা দিচ্ছে হাসপাতালের পিয়ন আর ওয়ার্ড বয়রা।প্রয়োজনীয় ডাক্তার না থাকায় ব্যান্ডেজ,সেলাইসহ বিভিন্ন অস্ত্রোপাচার পিয়ন,ওয়ার্ড বয়রা করে থাকেন।ফলে সব সময় রোগীরা মৃত্যুর ঝুঁিকর
আশংকায় থাকেন। উপজেলা কমপ্লেক্সে জুনিয়র কনসালটেন্ট(স্যার্জিকেল),জুনিয়র কনসালটেন্ট(চর্ম ও যৌন),জুনিয়র কনসালটেন্ট(শিশু),জুনিয়র কনসালটেন্ট(ডেন্টাল),জুনিয়র
কনসালটেন্ট(নাক কান গলা),জুনিয়র কনসালটেন্ট(অর্থোপেডিক্স),জুনিয়র কনসালটেন্ট(মেডিসিন),জুনিয়র কনসালটেন্ট (চক্ষু),প্যাথলজিষ্ট,হোমিওপ্যাথিকসহ অনেক চিকিৎসকের পদ র্দীঘদিন ধরে শূণ্য পড়ে রয়েছে। ৫০ শয্যা হাসপাতাল হিসেবে খাদ্য বরাদ্ধ পাওয়া গেলেও চাহিদা মোতাবেক ঔষধপত্রসহ চিকিৎসক,নার্স ও জনবল সংকট বিরাজ করছে।অথচ এ হাসপাতালে প্রায় সময় ইনডোরে ৮০/৯০ জন রোগী ভর্তি থাকে এবং আউটডোরে ৫/৬‘শ রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। ৫০ শয্যা হলেও শয্যার তুলনায় রোগী বেশী ভর্তি হওয়ায় প্রায়ই রোগীদেরকে মেঝেতে বা বারান্দায় থাকতে হয়। উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ১টি পল্লী স্বাস্থ্য
কেন্দ্র, ৩টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের অধীনে ৮টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র রয়েছে।এসব কেন্দ্রে নানাবিধ সংকট বিরাজ করছে।উপজেলার একমাত্র গুনিয়াউক ১০ বেড পল্লী স্বাস্থ্য
কেন্দ্রের অবস্থা জরাজীর্ণ। ২ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও একজনও নেই। ডাক্তার,নার্স,কর্মচারিসহ ওষুধ,অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ,জরার্জীণ
অবকাঠামো,চিকিৎসক ও কর্মচারিদের আবাসিক সংকটসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। একাধিক সূত্র জানায় এ উপজেলায় ডাক্তার ও সেবিকাদের পোষ্টিং দেয়া হলেও তদবির করে তারা অন্যত্র চলে যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ অভিজিৎ রায় ডাক্তার সংকটের কথা স্বীকার করে জানায়, প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার না থাকায় চিকিৎসা কার্যক্রম
চালাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। ডাক্তার সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যার বিষয়ে প্রতিমাসে সিভিল সার্জনসহ উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে অবহিত করা হচ্ছে। আকতার হোসেন ভুইয়া
নাসিরনগর,ব্রাহ্মণবাড়িয়া।