বন্যায় জামালগঞ্জে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

তৌহিদ চৌধুরী প্রদীপ : ভারতীয় পাহাড়ি ঢল ও টানা কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিতে সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। কয়েক দিন পর আকাশে রোদ উঠায় পানিবন্ধি মানুষের কিছুটা আশা সঞ্চার হয়েছে। জামালগঞ্জ উপজেলা সদর ও শরহর তলীর আশপাশের কিছু বাসা বাড়িতে বানের পানি প্রবেশ করায় দুর্ভোগে পোহাচ্ছেন লোকজন। জামালগঞ্জে সুরমা নদীর পানি উপছে বাসা- বাড়ি- নীচু গ্রাম সড়ক প্লাবিত হয়েছে। জামালগঞ্জ খেয়াঘাট টু নয়াহালট পুর্বপাড়া সড়ক ভেঙ্গে একই এলাকা দুই ভাগে বিভাজন হয়ে গেছে। এতে চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয়দের। এছাড়া জামালগঞ্জ-সুনামগঞ্জ সড়কের নতুনপাড়া থেকে শাহাপুর বাঁধ বাজার পর্যন্ত পানি উপচে গর্তের সৃষ্টি হয়ে যাত্রী চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এলাকাবাসী।
উপজেলার সাচনা বাজার ইউনিয়ন, বেহেলী ইউনিয়ন, জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়ন, ফেনারবাঁক ইউনিয়ন, সদর ইউনিয়ন ও ভীমখালী ইউনিয়নের নীচু এলাকার অনেক ঘর-বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। তবে আজ শুক্রবার আকাশে রোদ থাকায় মানুষজনের কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে।
এদিকে, সুরমা নদী থেকে হাওরে পানি বাড়ায় অনেক গ্রামে ঢেউয়ে ঘর-বাড়ি ভাঙ্গনের আশংকা করছেন হাওরের বিচ্ছিন্ন পল্লী গ্রামের লোকজন। বন্যা কবলিত খবরা খবরের জন্য জামালগঞ্জ উপজেলার কন্ট্রোল রুম থেকে জানা যায়, উপজেলার ছয় ইউনিয়নের বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে-১৬৯ জন বানভাসি আশ্রয় নিয়েছেন। সরকারী ভাবে তাদের শুকনো খাবার ও সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। তবে তা একেবারেই সামান্য বলে জানিয়েছেন অশ্রিতরা।
এদিকে, সুনামগঞ্জ-সিলেট বন্যার পানি দ্রুত না যাওয়ার কারন হিসেবে কিশোরগঞ্জের ইটনা-মিঠামাইন সড়ক নির্মাণ অন্তরায় হিসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যপক প্রচার হচ্ছে। সিভিল সোসাইটি দাবী করেন, ইটনা-মিঠামইন অবুড়া সড়কে কোন হাইড্রোলজিক্যাল সার্ভে হয়নি। বৃহদাকার কোন নির্মাণ প্রজেক্ট করার আগে নদীর পানি প্রবাহ, পানির উৎস, বৃষ্টির পানি, হাওরের পানির উপর এর কি প্রভাব পড়বে এসব সার্ভে করতে হয় উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সুনামগঞ্জের হাজার হাজার লোকজন দাবী করেন। পর পর বন্যার প্রধান কারণ হচ্ছে ২৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ইটনা-মিঠামইন সড়কটি। যার প্রবল বাধার কারণে জেলার প্রধান নদী সুরমা কালনী ও কুশিয়ারার পানি মেঘনা নদীতে প্রবাহিত হতে পারেনা।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার (২০ জুন) বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে সুনামগঞ্জ ও সিলেটে এসে পানি সম্পদ প্রতি মন্ত্রী বলেন, ইটনা-মিঠামইন সড়কের কারণে পানি আটকে গেলে তা পাস করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) দুপুরে বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জাহিদ ফারুক আরো বলেন, ‘মিঠামইনে সড়কের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “নদীর পানি যাতে পাস হতে পারে সে ব্যবস্থা করা হবে। তবে চলতি বর্ষায় এটি ভালোভাবো পরিক্ষা-নিরিক্ষা করে এর পরে পরিকল্পনা নেয়া হবে।