চার হাজার বন্যার্তদের রান্না করা খাবার দিলো ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদ
ওসমানীনগর প্রতিনিধি : বন্যায় আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা সিলেটের ওসমানীনগরে-৪ হাজার মানুষের মধ্যে রান্না করা খাবার বিতরণ করেছেন ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদের নেতৃবৃন্দরা। বুধবার উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে ৮টি ইউনিয়নের ৭০টি আশ্রয়কেন্দ্রে এসব খাবার বিতরণ করা হয়।
জানা গেছে, অতিবৃষ্টি ও কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ওসমানীনগরে ৭০টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বন্যা কবলিত মানুষ বসবাস করছেন। তদের জন্য এক বেলা উন্নতমানের খাবার নিয়ে হাজির হন উপজেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা। এছাড়া আরো প্রায় ৫ শতাধিক পানিবন্দি মানুষের বাড়ি-বাড়ি পৌছে দেয়া হচ্ছে এসব খাবার। এই ধরনের উদ্যোগ বন্যাকবলিত মানুষের জন্য একটি বড় সহায়তা হিসেবে কাজ করছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। মঙ্গলবার রাত থেকেই উপজেলা পরিষদ ভবনের পাশে বন্যার্থদের খাবার বিতরণ উপলক্ষে উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে গভীর রাত পর্যন্ত চলে ব্যাপক কর্মজজ্ঞ। বুধবার সকাল থেকেই গাড়িযোগে ৮টি ইউনিয়নে পাঠানো হয় রান্না করা উন্নতমানের খাবার। খাবার আশ্রয়কেন্দ্রে ও পানিবন্দি মানুষের বাড়িতে ও প্রতিটি ইউনিয়নের দূর্গম এলাকায় খাবার পৌছাতে রাখা হয়েছে নৌকার ব্যাবস্থা। উপজেলা পরিষদ ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা দিনব্যাপি আশ্রয়কেন্দ্রে ও পানিবন্দি মানুষের হাতে পৌছে দেন খাবার। উপজেলার তাজপুর মঙ্গলচন্ডী নিশিকান্ত সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ও দয়ামীর ছদরুন নেছা উচ্চ বিদ্যালয়সহ কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্রে খাবার বিতরণ করেন উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমদ ভিপি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপমা দাস, ভাইস চেয়ারম্যান আনা মিয়া, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জাহানারা বেগম, জেলা পরিষদের সদস্য এম এ হামিদ, এলজিইডি কর্মকর্তা আব্দুল্লা আল মামুন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দাল মিয়া, তাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান অরুনোদয় পাল ঝলক, ওসমানীনগর অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি শেখ ফয়ছল আহমদ, যুক্তরাজ্য প্রবাসী জুনেল আহমদ নজির, সেলিম খান, সিরাজুল ইসলাম রূপা, জুবায়ের আহমদ শাহীন, মঙ্গলচন্ডী নিশিকান্ত সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদ হাসান, ইউপি সদস্য খালেদ আহমদ খুকু, নোমান আহমদ, জাতীয় পার্টি নেতা মকবুল আলী, উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক জুবায়ের আমিন প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, চলমান সৃষ্ট বন্যায় কেউ না খেয়ে থাকবে না। ওসমানীনগরর উপজেলা পরিষদ সব সময় বন্যার্ত মানুষের পাশে আছে। উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে সরকারি বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রীর পাশাপাশি রান্না করা খাবার পৌছে দেয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে আরো দেয়া হবে, তবুও এই এলাকার মানুষ খাবারের কষ্টে থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী সব সময় বন্যা দূর্গত মানুষের খোঁজ খবর রাখছেন। এছাড়া, এই এলাকার প্রবাসীরাও আন্তরিকতার সাথে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের খাদ্যসহায়তাসহ আর্থিক সহায়তা করছেন। উপজেলা পরিষদ প্রতিনিয়ত কাজ করছে যাতে মানুষদের এই কঠিন সময়ে প্রয়োজনীয় সাহায্য পৌঁছানো যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপমা দাস বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা সকল মানুষ তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা পাচ্ছেন। রান্না করা খাবার বিতরণ থেকে শুরু করে অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলমান রয়েছে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শামীম আহমদ ভিপি বলেন, আমাদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে বন্যাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের দুর্ভোগ লাঘব করা। আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষদের জন্য রান্না করা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে এটি প্রয়োজনে অব্যাহত রাখার চেষ্টা করবো।