দিরাইয়ে পাকা রাস্তার ওপর মাটি ভরাট, একই ব্যক্তি ভাগিয়ে নিয়েছেন ৩ প্রকল্প

দিরাই (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার চরনারচর ইউনিয়নের লৌলারচর গ্রামে সরকারি অর্থায়নে নির্মিত পাকা রাস্তার উপর মাটি ভরাট কাজের প্রকল্প অনুমোদন দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে লৌলারচর গ্রামের মোক্তার হোসেন ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। ওই প্রকল্পের সভাপতি উপজেলার চরনারচর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য খোকন কিবরিয়া। এই প্রকল্প ছাড়াও তিনি একাই ভাগিয়ে নিয়েছেন আরও দুই প্রকল্প। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি তিনি। খোকন কিবরিয়ার অন্য দুই প্রকল্পেও অতিরিক্ত বরাদ্দ দেয়ার অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। জানা যায়, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে গ্রামীন অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা-গম) ও (কাবিটা- কাজের বিনিময়ে টাকা) কর্মসূচির অধীনে এসব প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। ইতিমধ্যে প্রথম কিস্তির টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। জানা গেছে, চরনারচর ইউনিয়নের লৌলারচর গ্রামের নুরুল ইসলামের দোকানের সামনে থেকে নদীর পাড় পর্যন্ত রাস্তায় মাটি সংস্কার কাজের জন্য ২ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। অথচ এ সড়কটি এলজিইডির তত্ত্বাবধানে সিসি ঢালাই করা ছিল। সরজমিন দেখা যায়, গ্রামের মাঝখান দিয়ে সড়কটির অবস্থান। দুইপাশে বাড়ি থাকায় সড়কের স্লোপে (পাশে) মাটি ফেলার জায়গা নেই। মূল রাস্তার ঢালাইয়ের উপরে নামকাওয়াস্তে মাটি ফেলা হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিপাতে সড়কটি কাঁদা ও বড় বড় গর্তে বর্তমানে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। একই ওয়ার্ডের লৌলারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে হিরন্ময় ভৌমিকের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ৫/৬ শ ফুট দৈর্ঘ্যের সিসি ঢালাই সড়কে দেয়া হয়েছে দুই বরাদ্দ। ছোট এই সড়কটি দুইভাগ করে প্রথম অংশে লৌলারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন ব্রীজ হতে সুখময় সেনাপতির বাড়ি পর্যন্ত মাটি দ্বারা সংস্কার কাজের জন্য ৭ হাজার ৯৭৪ মে. টন গম বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বাকি অংশে প্রানেশ দাসের বাড়ি হতে হিরন্ময় ভৌমিকের বাড়ি পর্যন্ত মাটি সংস্কার ও সিসি ঢালাইয়ের জন্য ২ লাখ ৮৯ হাজার ৯৭০ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। সরজমিন দেখা যায়, সড়কটির পাশ ঘেঁষে ১০/১২ টি পরিবারের বসবাস। তারাই সড়কটি ব্যবহার করে থাকেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত ৩/৪ বছরে এ সড়কে একাধিক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। মূলত প্রকল্পের নামে সরকারি টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারা করতেই এসব প্রকল্প দেয়া হয় বলে অভিযোগ করেন এলাকার লোকজন।
দিরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার সনজীব সরকার বলেন, প্রকল্পগুলো পূর্ববর্তী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সময়ে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। অনিয়ম হয়ে থাকলে খতিয়ে দেখা হবে।