মন্ত্রীসভায় টিউলিপ, রোশনারা বাংলাদেশি কমিউনিটিতে উচ্ছ্বাস, আনন্দ
মাহমুদুর রহমান তারেক, যুক্তরাজ্য : ইতিহাস সৃষ্টি করে যুক্তরাজ্যে নতুন সরকারের মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন দুই ব্রিটিশ বাংলাদেশি এমপি টিউলিপ ছিদ্দিক ও রোশনারা আলী। দুই বাঙালি কন্যার ব্রিটিশ মন্ত্রীর স্থান পাওয়ায় কমিউনিটিতে চলছে উচ্ছ্বাস, আনন্দ। নিজ দেশের মানুষের শুভেচ্ছা, ভালবাসায় ভাসছেন নতুন নিয়োগ পাওয়া দুই মন্ত্রী।
ক্রয়োডন কাউন্সিলের সেলহাস্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলার মোহাম্মদ ইসলাম বলেন, এটি ব্রিটিশ বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের জন্য জন্য সত্যিই একটি গর্বের মুহূর্ত, কারণ ইতিহাসে প্রথমবারের মতো যুক্তরাজ্যের সরকারে মন্ত্রী পদে দুইজন ব্রিটিশ বাংলাদেশী এমপি নিয়োগ পেয়েছেন। তাদের নিষ্ঠা এবং কঠোর পরিশ্রম আমাদের সকলের জন্য অনুপ্রেরণা! আসুন আমরা এই মাইলফলকটি উদযাপন করি এবং টিউলিপ সিদ্দিক এবং রোশনারা আলীর প্রতি আমাদের সমর্থন প্রদর্শণ করি, কারণ তারা শ্রেষ্ঠত্বের সাথে আমাদের সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করে।
এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে গিয়ে ব্রিটেনের বাংলাদেশী মালিকানাধীন প্রথম ও একমাত্র ইংরেজি দৈনিক দ্যা ডেইলি ড্যাজলিং ডন’র প্রতিষ্টাতা ও প্রকাশক মুনজের আহমদ চৌধুরী বলেন, ব্রিটেনে বাংলাদেশী হাজার হাজার পরিবারের চতুর্থ প্রজন্ম চলছে। বাংলাদেশি, ভারতীয় ও পাকিস্থানি কমিউনিটির শুরু একই সময়ে। তিন কমিউনিটিই শতবর্ষী। ভারতীয় ও পাকিস্থানি কমিউনিটি বহু আগেই ব্রিটেনে মন্ত্রীত্ব পেয়েছেন। রুশনারা আলী ও টিউলিপ সিদ্দিকের আজকের মন্ত্রীসভায় ঠাঁই পাওয়া দেরিতে হলেও নিঃসন্দেহে ব্রিটেনে বাংলাদেশিদের বড় অর্জন।
লেবার পার্টির বিজয়ী দুই এমপি মন্ত্রীসভায় নিয়োগে অভিনন্দন জানাতে ভুলেন নি কনজারভেটিভ পার্টির বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নেতারাও। ড্যাগেনহাম অ্যান্ড রেইনহামের কনজারভেটাভি পার্টির সাবেক চেয়ারম্যান দেওয়ান মাহদী বলেন, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দু’জন এমপি টিউলিপ ছিদ্দিক ও রোশানারা আলীকে ব্রিটিশ সরকারের মন্ত্রণালয়ে দেখে আমি ব্যক্তিগতভাবে আনন্দিত, উচ্ছ্বাসিত এবং গর্ববোধ করছি। আমরা এর আগে দেখেছি, লন্ডনের মেয়র পাকিস্থানি বংশোদ্ভূত, প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত, যা এথনিক মাইনোরেটির মানুষের জন্য অনেক অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে ছিল। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কোন এমপি কখনো মন্ত্রণারয়ের দায়িত্ব পান নি, এ হিসেবে এটি আমাদের জন্য নতুন এক ইতিহাস। যদিও আমি কনজারভেটিভ পার্টির এক্টিভিস্ট, তারপরও আমি একইভাবে আনন্দিত, বাংলাদেশিদের মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়ায়। মনে হয় এই অনুরপ্রেরণা বাকি সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। সেই দিন আর বেশি দূরে নয় যে দিন আমরা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত লন্ডনের মেয়র দেখবো, প্রধানমন্ত্রী দেখবো। ছোট আশা থেকে, ছোট স্বপ্ন থেকে আশা বাস্তবায়ন হয়, কখন দেরিতে হয়, কখন তারাতারি হয়। আমরা সেই আমায় দিন গুনছি। ভবিষ্যতে বাংলাদেশি রাজনীতিবিদদের ব্রিটিশ রাজনীতির উচ্ছ আসনে দেখতে চাই।
লন্ডনের বাসিন্ধা কবি মাশূক ইবনে আনিস বলেন, রোশনারা আলী এমপি ও টিউলিপ সিদ্দিক এমপি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের মন্ত্রীসভার সদস্য হওয়ায় প্রাণঢালা অভিনন্দন! বাঙালী জাতির কৃতিসন্তানদের এই গৌরবে আমরা গর্বিত। পৃথিবীর ইতিহাসে আমাদের গৌরবের ধন রোশনারা আলী, টিউলিপ সিদ্দিক, রুপা হক ও আফসানা বেগম।