অষ্ট্রিয়ায় ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
২১ আগস্ট শুক্রবার বেলা ৩ টায় ভিয়েনার স্থানীয় একটি হল রুমে অষ্ট্রিয়া আওয়ামী লীগের উদ্যোগে গ্রেনেড হামলায় নিহিতদের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে ।
অষ্ট্রিয়া আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক শাহ কামাল এঁর সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অষ্ট্রিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার হাফিজুর রহমান নাসিম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অল ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি এম, নজরুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি ছিলেন অষ্ট্রিয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভানেত্রী নাসরিন নাহীদ ।
সভার শুরুতেই অনলাইনের মাধ্যমে সংযুক্ত হন সাবেক আইন মন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু এম পি । তিনি বলেন, আজ ভয়াল ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবস, বিভীষিকাময় সেই রক্তে ভেজা দিন। ২০০৪ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ আয়োজিত মিছিল-পূর্ব সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে দলের সভাপতি শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা এবং গুলিবর্ষণ করে ঘাতকরা। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হন। আহত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ পাঁচ শতাধিক। যাদের অনেকেই চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন।
তিনি নিহিতদের রুহের মাগফেরাৎ কামনা করেন এবং অষ্ট্রিয়া আওয়ামী লীগ আজ এই আলোচনার সভার আয়োজন করায় উপস্থিত নেতা কর্মীদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান ।
প্রধান অতিথি এম নজরুল ইসলাম বলেন, ২০০৪ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ আয়োজিত মিছিল-পূর্ব সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে দলের সভাপতি শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা এবং গুলিবর্ষণ করে ঘাতকরা। একটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার ভয়াবহ সেই ঘটনা বাঙালি জাতি কোনোদিন ভুলবে না। এ ঘটনায় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী ও দলের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। এই বর্বরোচিত হামলায় নিহত অন্যরা হলেন : শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রশীদ, আবুল কালাম আজাদ, রেজিনা বেগম, নাসির উদ্দিন সরদার, আতিক সরকার, আবদুল কুদ্দুস পাটোয়ারি, আমিনুল ইসলাম মোয়াজ্জেম, বেলাল হোসেন, মামুন মৃধা, রতন শিকদার, লিটন মুনশী, হাসিনা মমতাজ রিনা, সুফিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), মোশতাক আহমেদ সেন্টু, মোহাম্মদ হানিফ, আবুল কাশেম, জাহেদ আলী, মোমেন আলী, এম শামসুদ্দিন, ইসাহাক মিয়া প্রমুখ। ২০০৪ সালের পর থেকে দিনটি ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।
সভাপতি খন্দকার হাফিজুর রহমান নাসিম বলেন, ২১ আগস্টের হামলার সময় তৎকালীন পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক রয়েছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল- আহতদের সাহায্যে এগিয়ে না এসে পুলিশ উল্টো তাদের হেনস্তা করে। এই ঘটনার পর হত্যা, অস্ত্র ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে মতিঝিল থানায় দুটি মামলা করা হয়। তিনি আরও বলেন,ওই সময় ক্ষমতায় থাকা বিএনপি সরকারের মদদে এবং তারেক রহমান এর নির্দেশেই এই হামলা করা হয়েছিল, সেই জন্য তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে বিচারের আয়োতায় আনার আহ্বান জানান ।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্তিত ছিলেন, অষ্ট্রিয়া যুব লীগের আহ্বায়ক নয়ন হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ইমরুল কায়েস, আইন বিষয়ক সম্পাদক মাহবুব খান শামিম, আওয়ামী লীগ নেতা গাজী মোহাম্মাদ, দেলোয়ার হোসেন, তুহিন হোসেন প্রমখ ।এছাড়াও বিপুল সংখ্যক নেতা কর্মী উপস্থিত ছিলেন ।
সভাশেষে সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী ও মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী আইভি রহমানসহ নিহত ২৪ জন শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। তাদের বিদ্রেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। এছাড়াও সেদিনের বীভৎস রাজনৈতিক হত্যাযজ্ঞে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া আহত প্রায় পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীর সুস্থতা ও আরোগ্য লাভের জন্যও দোয়া করা হয়।