বাংলাদেশী কমিউনিটি ইন ডোনেগালের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

বহু ভাষাবাসী ও সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের এক অনুপম দৃষ্টান্ত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক বিভাগ - UNESCO সমগ্র বিশ্বে শান্তি ও সৌহার্দ্য বজায় রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। দেশে দেশে শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক তথ্য আদান প্রদান করে পারস্পরিক সম্মান ও ভালোবাসা ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে ঠেকসই উন্নয়ন সম্ভব। আর এই ঠেকসই উন্নয়নে মাতৃভাষায় শিক্ষাকার্যক্রম অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ।
আমাদের মহান একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা লাভ করার পর থেকে দেশে দেশে এই দিবসটি মাতৃভাষার প্রতি সম্মান ও ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।
প্রতিবারের ন্যায় এবারও দিবসটির জন্য একটি নতুন প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে । এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় " Multilingual education is a pillar of intergenerational learning"

বাংলাদেশী কমিউনিটি ইন ডোনেগাল অদ্য দুপুর ১ ঘটিকার সময় স্থানীয় লেটারকিনি আওরা লেজার সেন্টারে মহান একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এক মাল্টিকালচ্যারাল ইভেন্ট আয়োজন করে। ডোনেগাল বাংলাদেশী কমিউনিটির সভাপতি জনাব শামিম আহমেদের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয় । পরবর্তীতে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস পটভূমি নিয়ে এক সংক্ষিপ্ত প্রামাণ্য চিত্র ও ১২ টি ভিন্ন ভিন্ন ভাষায় ২১শে ফেব্রুয়ারির কালজয়ী গান "আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিয়ে পারি " প্রজেক্টেরের মাধ্যমে উপস্থিত দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করা হয় ।

দেশী বিদেশী সকল অংশগ্রহণকারীরা এসময় ভ্রাম্যমাণ শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের আত্নত্যাগকে সম্মান প্রদর্শন করেন । কাউন্টি ডোনেগালের স্বতন্ত্র সাংসদ জনাব থমাস প্রিংগল উনার মায়ের সাথে অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করেন । তিনি এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মাতৃভাষার গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, ভাষার জন্য আত্নত্যাগ সম্মান ও গৌরবের, প্রত্যেকের কাছে তাঁর মায়ের ভাষার গুরুত্ব অপরিসীম । তিনি আফসোস করে বলেন আইরিশ ভাষার প্রতিও আগ্রাসন পরিচালনা করা হয়েছে এবং এটি এখন বিলুপ্তির পথে, তিনি নিজেও একজন আইরিশ হয়ে আইরিশ ভাষায় খুব বেশী দক্ষ ও পারদর্শী নয়, তা দু:খ ভারাক্রান্ত হ্নদয়ে স্বীকার করেন ।
এছাড়া ডোনেগাল ইন্টারকালচারাল প্লাটফর্মের প্রতিষ্ঠাতা মি. পল কিরনন বাংলাদেশী কমিউনিটি ইন ডোনেগালের ভূয়সী প্রশংসা করেন, ভাষার প্রতি সম্মান ও ভালোবাসা প্রদর্শন করার জন্য বাংলাদেশীদের অবদান আজ বিশ্ব স্বীকৃত বলে মন্তব্য করেন।
বিভিন্ন দেশের প্রায় ২৫ জন শিল্পী মাল্টিকালচ্যারাল সাংস্কৃতিক পর্বে অংশগ্রহণ করেন, তার মধ্যে অন্যতম ১৫ সদস্যের লেটারকিনি সিনিয়র একরোডিয়ান ব্যান্ড, আইরিশ কবিতা আবৃত্তি করেন আন মেরী মিকমারা, বাংলাদেশীদের পক্ষ থেকে গান পরিবেশন করেন উজ্জ্বল দাস দূর্জয়, মিসেস মীনা খাঁন, মিসেস ইসরাত মুন, জিম্বাবুয়ে, ঘানার সংগীত শিল্পী ও বিদেশে বেড়ে উঠা বাংলাদেশী ছেলে মেয়েদের কন্ঠে বাংলা কবিতা আবৃত্তি, দেশাত্মবোধক গান,চিত্রাঙ্কন প্রদর্শনী ছিল উল্লেখযোগ্য। উক্ত অনুষ্ঠানটি পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন ওবায়দুর রহমান রুহেল।