বাংলাদেশে কেনাবেচা হয় ইতালির ভিসা, ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি
বাংলাদেশে ইতালির শ্রমভিসা কেনাবেচা হয়। এক একটি ভিসা ১৫ হাজার ইউরোয় (প্রায় ১৯ লাখ টাকা) বিক্রি হয়। এ অভিযোগ করে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি হুঁশিয়ার করে বলেন, ভিসার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে দেশটি।
ইতালির মন্ত্রিসভায় মঙ্গলবার এক বৈঠক শেষে ভিডিও বার্তায় মেলোনি এ ধরনের কথা বলেন। খবর ডয়চে ভেলের।
প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে থেকে ইতালিতে আসা কর্মীদের সবচেয়ে বড় অংশ বাংলাদেশি। তারা ভিসা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত।
তিনি বলেন, অভিবাসন ইস্যুতে কঠোর অবস্থানে আছে সরকার। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে৷ পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান শ্রম ঘাটতি পূরণের অংশ হিসেবেও নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ১৩ থেকে ১৫ জুন ইতালিতে জি-সেভেন-এর শীর্ষ সম্মেলন হবে। এরপর এই অনিয়ম রোধে নতুন ব্যবস্থা পাসের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ভিসা ব্যবস্থায় থাকা ফাঁককে কাজে লাগিয়ে বিদেশি কর্মীদের অবৈধভাবে দেশটিতে পাচার করছে অপরাধীচক্র৷ মাফিয়া বিরোধী প্রসিকিউটরকে এ নিয়ে তদন্তের তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী।
২০২৩-২৫ সময়কালের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের নাগরিকদের শ্রমভিসার কোটা ৪ লাখ ৫২ হাজার৷ অপরদিকে চলতি বছর এ পর্যন্ত সমুদ্রপথে ২১ হাজার ৫৭৪ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ইতালিতে পৌঁছেছে৷
এদিকে ভিসা পেতে বাংলাদেশিরা নানা ধরনের জালিয়াতি করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ জন্য বাংলাদেশিদের ভিসা পেতেও দেরি হচ্ছে।
গত এপ্রিল মাসে এ দেরির ব্যাখ্যাও দেয় ঢাকায় ইতালির দূতাবাস। দূতাবাস জানায়, ভিসা আবেদনের সংখ্যা কোভিড মহামারির আগের সময়ের তুলনায় তিনগুণের বেশি এবং ২০২২ সালের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। গড়ে চারটির মধ্যে একটি আবেদনের সঙ্গে জাল নথি রয়েছে। এই পরিস্থিতির কারণে দূতাবাসকে অতিরিক্ত চেকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যা প্রকৃত আবেদনকারীদের প্রক্রিয়াকেও ধীর করে দিচ্ছে।
ইতালিয়ান দূতাবাস থেকে বলা হয়, আমরা ভিসা আবেদনকারীদের একটি সাবলীল সেবা দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছি। দূতাবাসের ভিসা বিভাগ সম্প্রতি একটি নতুন এবং বড় জায়গা নিয়েছে। কিছু অতিরিক্ত কর্মীও প্রত্যাশা করা হচ্ছে। ঢাকায় ইতালির জন্য ভিএফএস ভিসা আবেদনকেন্দ্রটি বৃহত্তর এবং আরও দক্ষ প্রাঙ্গণে স্থানান্তরিত হয়েছে। ২০২৩ সালে দূতাবাস দ্বারা প্রক্রিয়াকৃত ভিসা আবেদন ২০ শতাংশ বেড়েছে।