চাগোস দ্বীপপুঞ্জ মরিশাসকে ফিরিয়ে দিচ্ছে যুক্তরাজ্য, গার্সিয়া দ্বীপে থাকবে আগের মতোই ঘাটি
ভারত মহাসাগরে অবস্থিত সামরিক কৌশলগত দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ দ্বীপপুঞ্জ চাগোস অবশেষে মরিশাসের কাছে ফিরিয়ে দিতে রাজি হয়েছে যুক্তরাজ্য। অর্ধশতকেরও বেশি সময় ধরে নিজেদের দখলে রাখার পর এই দ্বীপের স্বাধীনতা দিতে রাজি হয় দেশটি। এই দ্বীপ নিয়ে কয়েক বছর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যস্থতার মধ্য দিয়ে মরিশাস চাগোস ফিরে পেতে যাচ্ছে। শিগগিরই যুক্তরাজ্য ও মরিশাসের মধ্যে এ বিষয়ে চুক্তি সই হবে বলে জানা গেছে। ৩ অক্টোবর যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ বিষয়ে একটি খবর প্রকাশ করে। চাগোস নামে এই গুচ্ছদ্বীপের ভেতরেই রয়েছে সামরিক ও কৌশলগত দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছোট্ট আরেকটি দ্বীপ দিয়েগো গার্সিয়া। অনেক বছর ধরে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের মধ্যে গোপন চুক্তির মাধ্যমে নিজেদের দখলে রেখেছিল। এখানে নৌসামরিক ঘাঁটি ও দূরপাল্লার বোম্বারের এয়ারক্রাফট মোতায়েন করে রাখা হয়। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার ও মরিশিয়ান প্রধানমন্ত্রী প্রবিন্দ জগনাথ এক যৌথ ঘোষণায় বলেছেন, কয়েক দশক ধরে চলে আসা বিরোধের অবসান হতে যাচ্ছে চাগোস দ্বীপ মরিশাসের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে। শিগগিরই দুই দেশের মধ্যে চুক্তি সই হবে।

তবে যৌথ ঘোষনায় বলা হয়েছে দুই দেশই এই মর্মে সম্মত হয়েছে, দিয়েগো গার্সিয়া দ্বীপটিতে আগের মতোই যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের ঘাঁটি থেকে যাবে এবং সেখানে থেকে অভিযান পরিচালনা করতে পারবে। এই চুক্তির বলে সেই দ্বীপে ফের বসতি স্থাপন করতে পারবে মরিশাস। তবে দিয়েগো মার্সিয়ায় কোনো বসতি স্থাপন করতে পারবে না মরিশাস। ১৯৬৮ সাল থেকে যুক্তরাজ্য চাগোস দ্বীপপুঞ্জ নিজেদের দখলে নিয়ে নেয় এবং এখানে বসবাসরত ১ হাজার অধিবাসীকে জোর করে উচ্ছেদ করে। এ ঘটনার জন্য যুক্তরাজ্য ক্ষমাও চেয়েছে। ২০১৯ সালের ফেব্ররুয়ারিতে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালত এই মর্মে রায় দেয় যে, চাগোস দ্বীপপুঞ্জে যুক্তরাজ্যের দখল অবৈধ। এই বছরের মে মাসে, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ একটি প্রস্তাব পাস করে। প্রস্তাবে যুক্তরাজ্যকে ৬ মাসের মধ্যে চাগোস দ্বীপপুঞ্জ মরিশাসকে ফিরিয়ে দিতে বলা হয়। কিন্তু যুক্তরাজ্য ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাস্তবায়ন করেনি।