কুলাউড়ায় ভোট পুনঃগণনার দাবি ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনঃগণনার দাবি জানিয়েছে টিউবওয়েল প্রতীকের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ময়নুল ইসলাম সবুজ।বুধবার (৮মে) রাত ১০ টার দিকে ফলাফল ঘোষণার সময় প্রাথমিক ফলাফল বিবরণীতে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী রাজকুমার কালোয়ার বিজয়ী দেখা গেলে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সবুজ ফলাফল পরিবেশন কেন্দ্রে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারি রিটানিং কর্মকর্তা মো.আবুল বাশারকে আপত্তি জানালে ভাইস চেয়ারম্যান পদের ফলাফল আটকে যায়। তার অভিযোগ, ভোট কেন্দ্রে দেওয়া একটি কেন্দ্রের ফলাফলের সাথে রিটার্নিং কর্মকর্তার নিকট দেওয়া ফলাফলের মিল নেই। উপজেলার জালালাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে দেওয়া ফলাফল সিটে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রাজকুমার কালোয়ার রাজুর ভোট দেখানো হয়েছে ১৩২ টি। আর রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেওয়া ফলাফল সিটে লেখা রয়েছে ৯৩২ টি ভোট । এখানে ৮০০ ভোটের ব্যবধান রয়েছে। সবুজ আরও জানান, এ কেন্দ্র ছাড়াও অন্যান্য কেন্দ্রের ফলাফল পরিবর্তন করা হয়েছে। ফলাফল সুষ্ঠু না হওয়ায় তা পুনঃগণনার জন্য আবেদন করবো।
ফলাফল ঘোষণার সময় উপজেলা সভা কক্ষে প্রচন্ড হট্টগোল শুরু হয়। পরে ফলাফল আটকে যায়। ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সবুজের আপত্তির ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক ফলাফল পর্যালোচনা করেন সহকারি রিটানিং কর্মকর্তা মো.আবুল বাশার, কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.মহিউদ্দিন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান ও কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী মাহমুদ। পরে ফলাফল পর্যালোচনার পর রাত ১১ টায় বিজয়ী হিসেবে চশমা প্রতীকের প্রার্থী রাজকুমার কালোয়ারের নাম ঘোষণা করা হয়।তাৎক্ষণিক ফলাফল পরিবেশন কেন্দ্রে এ ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে প্রতিবাদ করেন সবুজ। পরে তার কর্মী সমর্থকরা মিছিল শুরু করলে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা লাঠিচার্জ করে তাদেরকে উপজেলা চত্বর থেকে সরিয়ে দেন ।বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান আঞ্জুমানে আল-ইসলাহ সমর্থিত দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী মাও. ফজলুল হক খান সাহেদ ৩৭ হাজার ৫ শত ৫৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন । তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কাপ-পিরিস প্রতীকের প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আসম কামরুল ইসলাম পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৮ শত ৫২ ভোট।এ ছাড়াও উপজেলা চেয়ারম্যান পদে আনারস প্রতীকের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রেনু পেয়েছেন ১৭ হাজার ২ শত ৯৮ ভোট, মোটরসাইসেল প্রতীকের প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কামাল হাসান পেয়েছেন ৫ হাজার ৫ শত ৮৪ ভোট।ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী চা শ্রমিক প্রতিনিধি রাজকুমার কালোয়ার রাজু চশমা প্রতীকে ৩১ হাজার ৩ শত ৫২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ময়নুল ইসলাম সবুজ টিউবওয়েল প্রতীকের পেয়েছেন ৩০ হাজার ৪ শত ৮৪ ভোট, বই প্রতীকের প্রার্থী তালামীয নেতা আফজাল হোসেন সাজু পেয়েছেন ১৬ হাজার ৯ শত ৯০ ভোট, তালা প্রতীকের প্রার্থী সাইফুল ইসলাম কুতুব পেয়েছেন ১৪ হাজার ৭ শত ৭৭ ভোট, টিয়া পাখি প্রতীকের পূরণ উরাং পেয়েছেন ৫ শত ৬১ ভোট।
উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ফুটবল প্রতীকের প্রার্থী জাসদ নেত্রী সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নেহার বেগম ৭১ হাজার ২ শত ৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেহা ফেরদৌস চৌধুরী পপি হাঁস প্রতীকে পেয়েছেন ২১ হাজার ৫ শত ১৮ ভোট।ভাইস চেয়ারম্যান সবুজের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মৌলভীবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো.শাহীন আকন্দ বলেন, বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলাফল নিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান সবুজ একটি অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগটি আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। প্রার্থীকে এ বিষয়ে লিখিতভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সালা উদ্দিন, কুলাউড়া (মৌলভীবাজার):