টাকার অভাবে কলেজে ভর্তি হওয়া অনিশ্চিত মেধাবী শিক্ষার্থী তামান্না আক্তারের, পড়ালেখা বন্ধ হবার উপক্রম

আক্তার হোসেন আলহাদী : হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে কলেজে ভর্তির সুযোগ থাকা সত্ত্বেও ভর্তির অর্থ জোগাড় করতে না পেরে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের প্রহর গুনছে তামান্না আক্তার নামের এ মেধাবী শিক্ষার্থী।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, বানিয়াচং উপজেলা সদরের ১নং ইউপির ৯নং ওয়ার্ডের মজলিশপুর গ্রামের হত দরিদ্র হতদরিদ্র মো: সিতু মিয়ার মেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থী তামান্না আক্তার। কিন্তু বসবাসের জন্য ঘর-বাড়ি না থাকায় বর্তমানে উপজেলার ১০নং সুবিদপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মির বাড়ি (নানা, মরহুম সৈয়দ মুতি মিয়ার বাড়িতে) আশ্রয় নিয়েছে।
তামান্না আক্তার এ বছর বানিয়াচং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, সাবেক (হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ উচ্চ বিদ্যালয়) থেকে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে (ভোকেশনাল) এসএসসি’তে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছে। তামান্না আক্তার জানান এ পর্যন্ত পড়াশুনা করতে গিয়ে ছোটবেলা থেকেই প্রচুর-সংগ্রাম করে পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রতিদিন বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে স্কুলে যেতাম। অভাবী দিনমজুর পিতার যেদিন আয় হয় সেদিন সংসারে খাবার জোটে নতুবা উপোস থাকতে হয়।
ছোটবেলা থেকে মেধাবী বলেই তার পড়ালেখা কোন বাধাতেই থেমে থাকতে পারেনি। অদম্য ইচ্ছে আর মানসিক শক্তি তার এ অবস্থায় নিয়ে এসেছে। এসএসসি পাস করার পর টাকার অভাবে কলেজে ভর্তি হওয়া অনিশ্চিত হয়ে পরেছে, বন্ধ হয়ে যেতে পারে এ মেধাবী শিক্ষার্থীর স্বপ্ন। জীবনের এমনি এক কঠিন অবস্থায় এসে হয়তো থেমে যাবে তার শিক্ষাজীবন। কিন্তু মনের জোরে রীতিমতো জীবন যুদ্ধে হার না মেনে চালিয়ে যেতে চায় পড়ালেখা।
মো: সিতু মিয়া জানান, ছোটবেলা থেকেই মেয়েটির পড়াশুনার প্রতি খুব আগ্রহী কিন্তু টাকার অভাবে কিছুই দিতে পারিনি। অধিকাংশ দিনই না খেয়ে স্কুলে যেতো। পড়াশুনা ছাড়া তাদের কোন চাহিদা নেই। নিজ মেধাগুণে এ পর্যন্ত এসেছে। সহায় সম্বল বলতে কিছুই নেই। ঘর-বাড়ি কিছুই নেই। প্রতিবেশীর বাড়িতে থেকে এতদিন সন্তানদের পড়ালেখা করিয়েছি। এখন খরচ চালানের সাধ্য নেই। ৫ মেয়ে সহ ৭ জনের সংসারের অনেক কষ্টে ধার-দেনা করেই চলছে সংসার। তার পরেও স্বপ্ন দেখছি সন্তানদেরকে মানুষের মতো মানুষ করার।
তামান্না আক্তার জানান, ছোটবেলা থেকে দরিদ্রতার সঙ্গে যুদ্ধ করে এ পর্যন্ত এসেছি। নিজেদের কষ্টের কথা অন্যকে বলতে লজ্জা নেই। পড়ালেখা করে সু-শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে মানুষের মত মানুষ হতে চাই। আমার বড় বোন, লুবনা আক্তার গত বছর (২০২৩) সালে বানিয়াচং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, সাবেক (হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ উচ্চ বিদ্যালয়) থেকে এসএসসি‘তে সর্বোচ্চ মার্ক গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে হবিগঞ্জ বৃন্দাবন সরকারী কলেজে ভর্তি হয়েও টাকার অভাবে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের প্রহর গুনছে, বর্তমানে সে বাড়িতে চলে এসেছে।
অর্থের অভাবে ধূলিসাৎ হতে চলেছে তামান্না আক্তারের স্বপ্ন। টাকার যোগান না পেলে চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে তার পড়ালেখা। সমাজের ধনবান ও বিত্তবানদের কাছে আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন নতুন কলেজে ভর্তির অর্থ ও পড়ালেখার জন্য। মেধাবী শিক্ষার্থীর স্বপ্ন পূরণের আলোর পথ দেখাতে আপনাদের দেয়া আর্থিক সাহায্যই হতে পারে দরিদ্র পরিবারের সন্তান তামান্না স্বপ্ন পূরণ।