দিরাইয়ে আবু সাঈদের পরিবারকে শিশির মনিরের আর্থিক সহযোগিতা

দিরাই (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে সেনাবাহিনী ও সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলিতে নিহত আবু সাঈদ (৩৩) ও আহত আলী আকবরের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের তারাপাশা গ্রামে গিয়ে তিনি নিহত আবু সাঈদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং তাদের হাতে নগদ ৫০ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তা তুলে দেন। একইসঙ্গে আহত আলী আকবরের পরিবারের সদস্যদেরও সহায়তা প্রদান করেন।
সাক্ষাতের সময় শিশির মনির বলেন, “গত ২২ জুন যৌথ বাহিনী ও সন্ত্রাসীদের গোলাগুলির সময় আবু সাঈদ নামের একজন নিরীহ ইলেকট্রিক মিস্ত্রি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান, একজন আহত হন। নিহত আবু সাঈদ কোনো পক্ষের লোক নন। পরিবার চালাতে গিয়ে ইলেকট্রিশিয়ান কাজ করতেন। এমন একজন নিরীহ মানুষকে এভাবে প্রাণ দিতে হবে—এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।”
তিনি আরও বলেন, “আজকের আধুনিক যুগে যখন দুই পক্ষ গ্রামে গ্রামে দাঁড়িয়ে গোলাগুলি করে, তখন লজ্জা লাগে। সন্ত্রাস যদি এভাবে ছড়িয়ে পড়ে, তবে দেশে নিরাপদে বসবাস করা কঠিন হয়ে যাবে। যে-ই সন্ত্রাস করুক না কেন—সে বিএনপি, জামায়াত বা অন্য যেকোনো দলের হোক—সন্ত্রাসীর পরিচয় একটাই, সে সন্ত্রাসী।”
আইনজীবী শিশির মনির জানান, ইতোমধ্যে তিনি বিচার বিভাগীয় তদন্ত, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের দাবিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একটি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন।
তিনি বলেন, “জগন্নাথপুর থানায় একটি অজ্ঞাতনামা মামলা হয়েছে শুনেছি। কেন অজ্ঞাতনামা হবে? প্রকৃত দোষীদের নাম এফআইআরে থাকা উচিত। দোষী যেই হোক, তার বিচার হওয়া দরকার। আইন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে—আমার পক্ষে না গেলেও।”
তিনি প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান, নিহত আবু সাঈদের পরিবার যেন ন্যায়বিচার ও সহযোগিতা পায়—সে বিষয়ে দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ২২ জুন দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের হাতিয়া গ্রামে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের ধরতে অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। এ সময় সন্ত্রাসীরা পালিয়ে জগন্নাথপুর উপজেলার গাদিয়ালা গ্রামে আশ্রয় নেয়। সেখানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনাস্থলে দিরাই উপজেলার তারাপাশা গ্রামের আবু সাঈদের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়। তিনি সেখানে কাজ করতে গিয়েছিলেন।একই ঘটনায় আহত হন আলী আকবর নামের আরেক শ্রমিক। সেনাবাহিনী প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, কুলঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা একরার হোসেন সমর্থিত সন্ত্রাসী বাহিনীর গুলিতে আবু সাঈদ মারা গেছে।