চার ধাপে স্পেনকে স্বাভাবিক জীবন যাত্রায় ফিরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সান্সেজ সরকার
![](https://europentv.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2020/04/29/bqi2djwrfxaf6gs3atpflb3mda.jpg?itok=w3bIHc0r×tamp=1588181657)
বিশ্বময় করোনা মহামারি তে ধরাসায়ী স্পেনের প্রেসিডেন্ট পেদ্রো সানচেজ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধ এবং স্বাভাবিক জীবন যাত্রায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত চারটি ধাপে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন, তিনি গত মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে মন্ত্রীসভার বৈঠকে আগামী জুন মাস পর্যন্ত চার ধাপের এ পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধ ও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যেতে স্পেন সরকারের পরিকল্পনার শুন্য বা প্রস্তুতি ধাপে দ্বীপ পুঞ্জ ছাড়া পুরো স্পেনে এই ধাপের কার্যক্রম শুরু হবে আগামী চার মে থেকে। এবং দ্বীপ গুলো সরাসরি প্রথম ধাপে প্রবেশ করবে। তবে আগামী ২ মে হতে লোকজন খেলাধুলা বা ব্যায়ামের জন্য বাহিরে যেতে পারবেন। এ ধাপে ক্রেতাদের এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে ছোট ছোট দোকানপাট খুলা যাবে এবং সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে রেস্টুরেন্ট গুলো তাদের টেক ওয়ে সার্ভিস চালু করতে পারবে।
![](https://europentv.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2020/04/29/95509578_160376952056843_6207964769228423168_n.jpg?itok=BRQfSqM_×tamp=1588181830)
প্রাথম ধাপঃ ১১ ই মে থেকে সারা দেশে শুরু হওয়া এই ধাপে ছোট ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলো খুলতে শুরু করবে যথাযথ ও পর্যাপ্ত নিরাপদ ব্যবস্থা রেখে।রেস্টুরেন্টগুলোর বাহিরের অংশ (তেররেসা) খোলা রেখে ৩০ শতাংশ কমিয়ে সার্ভিস দেওয়া যাবে। একই নিয়ম মেনে ট্যুরিস্ট হোটেলগুলোও খোলা হবে।
কৃষি এবং মৎস খাতের যে সেক্টরগুলো সীমাবদ্ধ ছিলো সেগুলো পূনরায় চালু করা হবে এবং ধর্মীয় উপাসনালয়গুলো মোট ধারণক্ষমতার তিন ভাগের এক ভাগ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন।
দ্বিতীয় বা মধ্যবর্তী ধাপ শুরু হবে ২৫ শে মে থেকে, এ ধাপে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে রেস্টুরেন্টগুলো তাদের ভেতরের অংশের মোট ধারণক্ষমতার তিন ভাগের এক ভাগ খোলা রাখতে পারবে, শিকার এবং ফিশিং করা যাবে। সিনেমা ও থিয়েটার, বিভিন্ন কালচারাল সেন্টার ও প্রদর্শনী গুলোও তাদের মোট ধারণক্ষমতার এক তৃতীয়াংশ কার্যক্রম চালাতে পারবে। ধর্মীয় উপাসনালয়গুলো তাদের মোট ধারণক্ষমতার ৫০ ভাগ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন।
তৃতীয় বা উন্নীত ধাপ শুরু হবে ৮ ই জুন থেকে, এ ধাপে স্বাভাবিক চলাফেরা সহজ করে দেওয়া হবে। কিন্ত বাড়ির বাহিরে এবং পাবলিক ট্রান্সপোর্টে অবশ্য ই মাস্ক ব্যাবহার করতে হবে। কমার্শিয়াল সেন্টার গুলোতে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে ধারণক্ষমতার শতকরা ৫০ভাগ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন। একই নিয়মে রেস্টুরেন্ট গুলোতে ধারণক্ষমতা ও ব্যস্ততার সীমা শিতিল করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা চালুরাখা হলেও এই শিক্ষাবছরে স্কুল কলেজ গুলো আর খুলা হবে না। তবে যে শিক্ষার্থীদের বিশেষ ক্লাসের প্রয়োজন বা ছয় বছরের নিচের বাচ্চাদের যাদের বাবা মা কাজে ব্যস্ত থাকবে তারা স্কুলে যেতে পারবে।
![](https://europentv.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2020/04/29/95659006_659757748179110_734431152688857088_n.jpg?itok=GFvYr7iD×tamp=1588181830)
৪৫ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকা স্পেনে শিথিল করা হয়েছে জরুরি অবস্থার নিয়মাবলি, শিশু কিশোর দের নির্দিষ্ট সময়ে এবং নির্দেশনা মেনে বাহিরে যাওয়ার অনুমতি গত ২৬ এপ্রিল থেকে অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিন ওঠানামা করলেও কমে এসেছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা, সাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া ত্বত্তমতে গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় ২,১৪৪ জন আক্রান্ত এবং ৩২৫ জনের মৃত্যু হলেও সুস্থ হয়েছেন ৬,৩৯৯ জন । আসার কথা হচ্ছে আক্রান্তের প্রায় ৫১.১৬ শতাংশ লোক সুস্থ হয়েছেন, যার মোট সংখ্যা হচ্ছে ১,০৮,৯৪৭ জন।
দেশটিতে ২,১২,৯১৭ জন আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যু হয়েছে ২৪,২৭৫ জনের। মাদ্রিদে করোনায় ৬০,৫৬৫ জন আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যু হয়েছে ৮,১০৫ জনের , কাতালুনিয়ায় ৪৮,৬৫৪ জন আক্রান্তের মধ্যে ৪,৯০৬ এবং কাস্থিয়া ই লিয়ন ১৬,৬৯০ জনের মধ্যে ২,৪৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্পেনে ৩৭,৯৯৪ জন সাস্থ্যকর্মী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তার মধ্যে অধিকাংশই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে মহান এ পেশায় আবারও যোগ দিয়েছেন এবং ৭৮ জন জীবন উৎসর্গ করেছেন। এ পর্যন্ত দেশটিতে ২৪৪ জন বাংলাদেশী আক্রান্তের মধ্যে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, এবং সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছে ১৩৫ জন।
এদিকে করোনা মহামারির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত স্পেন প্রবাসী বাংলাদেশীদের পাশে দাড়িয়েছে বাংলাদেশ কমিউনিটির বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, তারা বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে সেবা অব্যাহত রাখলেও মাদ্রিদে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস এখনো তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে ব্যার্থ হয়েছেন বলে বিভিন্ন অভিযোগ সামাজিক মাধ্যমে উঠে এসেছে, স্পেনের তেনেরিফ সহ বিভিন্ন প্রদেশ থেকে অনেকে এনটিভিকে তাদের অভিযোগ জানান, এর প্রেক্ষিতে দুতাবাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে কর্তৃপক্ষ জানায় তারা সার্বিক অবস্থার বিবেচনা করে, নিয়ম শৃংখলা বজায় এবং স্বচ্ছতা রেখেই সরকার প্রদত্ত অনুদান প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে পৌছানোর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন ।