স্পেনে শেষ বারের মতো লকডাউন এর মেয়াদ বেড়েছে, দ্বিতীয় বার মহামারী দেখা দেয়ার আশংকা
গত ১৩ মার্চ থেকে চলমান রাষ্ট্রীয় জরুরী অবস্থার মেয়াদ ষষ্ঠ এবং শেষ বারের মতো জাতীয় সংসদে ভোটাভুটির মাধ্যমে বৃদ্ধি করা হয়েছে, যার ফলে স্পেনের জনগনকে আগামী ২১ জুন ২৪ঃ০০ ঘন্টা পর্যন্ত লকডাউন নিয়মাবলী মেনে চলতে হবে।
বিগত প্রায় তিন মাস ধাপট খাঠিয়ে বৈশ্বিক মহামারী করোনা ইউরোপের অন্যান্য দেশ সহ স্পেন কে লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে, প্রতিদিন আক্রান্ত আর মৃত্যুর সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বাড়ছিল, সর্বোচ্চ মৃতের সংখ্যা ৯৫০ এ ও ঊঠেছিল, সেই স্পেনে মৃতের সংখ্যা টানা ৩ দিন শূন্যের কোঠায় নেমে আসায় অনেকটা স্বস্তি ফিরে এসেছে ফুটবল প্রেমী স্পেনিশ জাতীর। গত এক সপ্তাহে মৃত্যু হয়েছে ৫৬ জনের, তবে আক্রান্তের সংখ্যা খানিকটা ওঠা নামা করলেও সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরার সংখ্যা দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এটা করোনা মোকাবেলায় স্পেন সরকারের অনন্য সাফল্য বলে দাবি করছেন অনেকে। স্পেনের প্রেসিডেন্ট পেদ্রো সানসেজ মনে করেন ,লকডাউন এর সুফল পেতে যাচ্ছে স্পেন, এবং স্পেন কে পুরোপুরি আশংকা মুক্ত করতে লকডাউন রাখা প্রয়োজন ছিল বিধায় ষষ্ঠবারের মতো আগামী ২১ জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে, তৃতীয় ধাপ শেষ হওয়া পর্যন্ত সকল কে নিয়মাবলি মেনে চলার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন খুব তাড়াতাড়ি স্পেন পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাবে।
স্পেনে۔ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ৩১ জানুয়ারি , কানেরিয়া দ্বীপে, স্পেনে প্রথম করোনা মহামারি তে মারা জান চার মার্চে একজন ব্যক্তি এবং ১৩ তারিখ রাত থেকে স্টেট অফ এলার্ম জারি করা হয়, ১২মার্চ থেকে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়, অনলাইনে বাসায় পাঠদান কর্মসূচী চালু থাকলেও গ্রীষ্মকালীন ছুটি পরে সেপ্টেম্বরে এক সাথে স্কুল খোলার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে বেশী দীর্ঘস্থায়ী লকডাউন ঘোষণা করে পর্যটন নির্ভর ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী দেশ স্পেন, ভয়াবহতার দিক থেকে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদ ও পর্যটন নগরী বার্সেলোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা এখনো۔ বেশি, এ পর্যন্ত দেশটিতে সাস্থ্য মন্ত্রণালয় এর দেয়া হিসেব মতে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২,৪০,৬৬০ জন, মৃত্যুবরণ করেছেন ২৭,১৩৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১,৫১,০০০ প্রায় ।
লকডাউন অবস্থা শিথিল থাকায় উৎসব মুখর স্পেনিশ জাতির বাধভাংগা জোয়ার নেমেছে রাস্তা ঘাটে, এতে করে আবারো সংক্রমণের পরিমান বৃদ্ধি পেয়ে মহামারী দেখা দেয়ার আশংকা করছেন অনেকে।
দ্বিতীয় বার মহামারী ঠেকাতে এখনো নিজেদের প্রস্তুত করতে পারেনি সালভাদর ইজার সাস্থ্য মন্ত্রণালয়, এরপর ও অর্থনৈতিকে চাংগা রাখতে খুলে দেয়া হচ্ছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কল কারখানা সহ উৎপাদ শিল্পের কোম্পানী গুলো। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ৪১৪৫ মিলিওন ইউরোর বিরাট অনুদানের ঘোষণা থাকলেও ইমার্জেন্সি অবস্থায় ১১৬১ মিলিয়ন ইউরো গ্রহন করবে , এবং বাকী ২৯৮৪ মিলিওন ইউরো কয়েক সপ্তাহের ভেতরে গ্রহণ করার কথা রয়েছে।এই অনুদান গুলো যথাযথ পরিকল্পনার মাধ্যমে কাজে লাগালে অর্থনৈতিক বিপর্যয় স্পেনের গায়ে লাগার কথা নয় তার পরেও কোভিড নাইন্টিন মহামারীর কারনে বেকারত্ব বরন কারী পরিবার গুলো সরকার ঘোষিত (এএরতে)(ERTE) মূল বেতনের ৮৫% এর পরিবর্তে ৭০% এবং অনেকে এখন পর্যন্ত কোন রকমে সহযোগিতা না পাওয়ায় দরিদ্র সীমার নিচে জীবন যাপন করতে দেখা গেছে।