বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাচনে বুধবার ভোট গ্রহণ- ভোট উৎসবে মাতবে ১ লাখ ৮৮ হাজার ভোটার
নবীন সোহেল, বিশ্বনাথ (সিলেট) : রাত পোহালেই ভোট উৎসবে মাতবে সিলেটের প্রবাসী অধ্যুষিত বিশ্বনাথ উপজেলার ১লাখ ৮৮ হাজার ভোটার। বহুল কাঙ্ক্ষিত উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে উপজেলাজুড়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে উপজেলার ৭৪টি কেন্দ্রে চলবে এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। ভোট শান্তিপূর্ণ করতে ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রে কেন্দ্রে মঙ্গলবার পৌছে গেছে ভোটের সরঞ্জাম। ভোরে পৌছে যাবে ব্যালট।
রির্টানিং কর্মকর্তার তত্য সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচনী এলাকার নিরাপত্তা রক্ষায় দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এছড়া র্যাব, পুলিশ ও আনসার ভিডিপির স্ট্রাইকিং ফোর্স কাজ করবে। কেন্দ্রের নিরাপত্তায় ১৩ জন বা ততোধিক আনসার ও ভিডিপি সদস্য মঙ্গলবার থেকে দায়িত্ব পালন শুরু করছেন।
বিশ্বনাথে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এই তিন পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপির মোট ১৯ জন প্রার্থী ভোটের লড়াইয়ে রয়েছেন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে রেকর্ড সংখ্যক প্রার্থী অংশ নিয়েছেন। চেয়ারম্যান পদে ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করলেও মুল প্রতিদ্বন্ধিতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগ বিএনপির নেতারা। তবে স্থানীয়দের ধারণা, মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে পঞ্চমুখী।
জনসমর্থন ও প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে থাকা এই পাঁচ প্রার্থী হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন (আনারস), পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক আলতাব হোসেন (টেলিফোন), জেলা বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা সোহেল আহমদ চৌধুরী (কাপ-পিরিচ), উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গৌছ খান (কইমাছ), উপজেলা বিএনপির নেতা মো. সেবুল মিয়া (দোয়াত কলম)। তবে শেষ পর্যন্ত ভোটাররা কোন দিকে যাচ্ছেন সেসব বিবেচনায় রেখে এবং বিভিন্ন সমীকরণ মিলিয়ে হেভিওয়েট প্রার্থীদের এ প্রতিদ্বন্দ্বিতা ত্রিমূখীও হতে পারে। তবে কে হাসবেন শেষ হাসি তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ফলে নির্বাচনে হারজিত নিয়ে সঠিক হিসাব মেলাতে পারছেন না প্রার্থীরা। সরেজমিন প্রত্যক্ষ ও ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে এমন ধারণা পাওয়া গেছে। এখন উপজেলাজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা ও চুলচেরা বিশ্লে¬ষণ।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে স্থানীয়দের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, হেভিয়েট পাঁচ প্রার্থীসহ প্রত্যেক চেয়ারম্যান প্রার্থীর একটা নিজস্ব ভোট ব্যাংক রয়েছে। তাছাড়া ব্যক্তি ইমেজ, আঞ্চলিকতা, সামাজিক প্রভাব এসবও ভোটও নির্বাচনি মাঠে ফ্যাক্টর হবে। তবে সকল প্রার্থীই জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। চেয়ারম্যান পদে বাকি প্রার্থীরা হলেন, প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা শমসাদুর রহমান রাহিন (শালিক), প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা এআর চেরাগ আলী (ঘোড়া), প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা আকদ্দুছ আলী (হেলিকপ্টার), প্রবাসী বিএনপি নেতা সফিক উদ্দিন (উট) ও প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী এনাম (মটর সাইকেল)।
এদিকে, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন। তারা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজ মিয়া (টিউবওয়েল), উপজেলা যুবলীগ নেতা মুহিবুর রহমান সুইট (মাইক), সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পার্থ সারথী দাশ পাপ্পু (টিয়াপাখি), বিএনপি নেতা আব্দুর রব (চশমা), বিএনপি নেতা কাওছার খান (তালা) ও আল ই্সলাহ নেতা ইসলাম উদ্দিন (বই)। এই পদেও আওয়ামী লীগ বিএনপির দুই যুবনেতার মধ্যে দ্বীমূখী লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে। আর মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। তারা হলেন, বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেত্রী জুলিয়া বেগম (ফুটবল), সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেত্রী বেগম স্বপ্না শাহিন (প্রজাপতি) ও প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা সহধর্মিনী করিমা বেগম (কলস)। এই পদেও লড়াই হবে জমজমাট।